News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শুক্রবার, ১৪ মার্চ, ২০২৫, ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১

নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের নির্বাচনের ‘মাস্টারমাইন্ড’


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫, ১০:৫৫ পিএম নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের নির্বাচনের ‘মাস্টারমাইন্ড’
বা থেকে সোহেল মোর্শেদ সারোয়ার, গোলাম সারোয়ার সাঈদ ও আহমেদুর রহমান তনু।

দীর্ঘ এক যুগেরও বেশী সময় পর প্রভাবশালী ওসমান পরিবারের রাহুমুক্ত হতে চলেছে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালনা পর্ষদ। তবে রয়ে গেছে আক্ষেপ। সভাপতি পদে শিল্পপতি ও বর্তমান সভাপতি মাসুদুজ্জামানের নাম নিশ্চিত থাকলেও শেষ সময়ে তিনি পরিচালক নির্বাচন থেকেই সরে যান। নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়ে তার স্বেচ্ছায় এ বিতাড়নের নানা আলোচনা যখন চারপাশে তখন ১৯ ফেব্রæয়ারী বিনা ভোটে নির্বাচিত ১৯ পরিচালকের ভোটে সভাপতি ও দুইজন সহ সভাপতির চেয়ারে নেতা নির্বাচন করা হবে। কে বসবেন এসব চেয়ারে সেটা নিয়ে এখন চলছে চেম্বারের পরিচালক ও তাদের অনুসারীদের মধ্যে আলোচনা। কারণ ব্যবসায়ী সমাজ চরম হতাশায়। এক যুগেরও বেশী সময় পর এবার ব্যবসায়ীরা ভোট দেওয়ার গণতান্ত্রিক পরিবেশ পাবে ভাবলেও সেটা মিইয়ে গেছে কয়েকজনের কারণে। তবে তার পরেও নির্বাচনের একটি পরিবেশ সৃষ্টি ও ওসমান পরিবারের হাতে পুরোপুরি জিম্মী না হওয়ার পেছনের ঘটনাতেও আছেন একাধিক মাস্টারমাইন্ড।

একাধিক ব্যবসায়ীরা জানান, সভাপতি পদে আপাতত সকলের পছন্দে রয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু। বিএনপির জেলা কমিটির প্রথম যুগ্ম আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য দিপুকে নিয়ে বেশীরভাগ সদস্যেরই নেই কোন আপত্তি। অনেকেই তাকে মুঠোফোনে সভাপতি হিসেবে দেখার অনুরোধ করেছেন। যদিও দিপু শুরু থেকেই নির্বাচন বা পরিচালক সহ সভাপতি নিয়ে অনীহায় রয়েছেন।

আলোচনা সবচেয়ে বেশী সহ সভাপতি নিয়ে। এখানে আলোচনায় বর্তমান কমিটির সহ সভাপতি মোর্শেদ সারোয়ার সোহেল ও সোহেল আক্তার সোহান।

তবে এ দুইজনকে নিয়ে আছে নানা বিতর্ক। বিশেষ করে মোর্শেদ সারোয়ার সোহেল হলেন ওসমান পরিবারে ঘনিষ্ঠ অনুসারী। বিগত দিনে ওসমানদের সঙ্গে ওৎপ্রোতভাবেই জড়িত ছিলেন তিনি। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি হঠাৎ ভোল পাল্টান। মিশে যান কো অপ্ট করে আসা সভাপতি মাসুদুজ্জামানের সঙ্গে।

ব্যবসায়ীদের অনেকেই বলছেন, মোর্শেদ সারোয়ার ফের সহ সভাপতি হলে সেখানে ওসমানদের প্রভাবটাই বেশী থাকবে।

অভিযোগ আগে বিগত নির্বাচনগুলোর আগে মোর্শেদ সারোয়ার সোহেল পছন্দের অনেককেই ভোটার করেছেন। ফলে তার একটি বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে। এ কারণেই এবারর নির্বাচন ঘিরে তিনি পর্দার আড়ালের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে কাজ করেন। মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করা অনেকের কাছ থেকেই তিনি প্রত্যাহার পত্রে সাক্ষর করিয়ে নেন। বিষয়টি নিয়ে অভ্যন্তরে বেশ তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ভোট হলে পছন্দের বাইরে কেউ জিততে পারবে না এমন কথাও তিনি ছড়িয়ে দেন। অনেকেই সে ফাঁদে পা দেন। সরে যান নির্বাচন থেকে। সে তালিকাতে হেভিওয়েটরাও রয়েছেন। পরিচালক পদে নির্বাচিত হতে পারলেও সভাপতি পদে আদৌ জিততে পারবেন না সেটা নিয়েও সন্দিহান ছিলেন মাসুদের ঘনিষ্ঠজনেরা। বিষয়টি আঁচ করতে পেরেই তিনি সরে গেছেন এমন গুঞ্জনও আছে।

নির্বাচিত প্রার্থী তালিকায় জেনারেল গ্রুপে মুস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া, মোহাম্মদ আবু জাফর, মাহবুবুর রহমান স্বপন, রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী, গোলাম মুহাম্মদ কায়সার, মো সোহাগ, মো. গোলাম সারোয়ার (সাঈদ), মো. মজিবুর রহমান, হোসেন মোহাম্মদ তানিম তৌহিদ, আহমেদুর রহমান তনু, মো. হানিফ মিয়া, আব্দুল্লাহ আল-মামুন।

অ্যাসোসিয়েট গ্রুপে মো. মোরশেদ সারোয়ার, সোহেল আক্তার, খন্দকার সাইফুল ইসলাম, আশিকুর রহমান, মোহাম্মদ জাকারিয়া ওয়াহিদ, মোস্তফা এমরানুল হক।

নির্বাচিত পরিচালকদের মধ্যে এবার চমক দেখিয়েছেন গোলাম সারোয়ার সাঈদ ও আহমেদ রহমান তনু। কারণ শুরুতেই এ দুইজন মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পর থেকে নানামুখী চাপ ছিল সরে যেতে। কিন্তু নির্বাচনের দাবীতে অটল এ দুই তরুণের কারণে শেষতক অন্যদের বলি দিয়ে ভোট আয়োজন থেকে বিরত থাকতে হয় মাসুদুজ্জামান ও মোর্শেদ সারোয়ারদের।

তবে এবার চেম্বারেও গোপন সিলেকশনের আলোচনা দানা বাধতে শুরু করে তফসিল ঘোষণার পর থেকেই। কিন্তু বাধ সাধেন গোলাম সারোয়ার সাঈদ। তিনি সাধারণ সভার আগে সংবাদ সম্মেলন করে রীতিমত অনেককে ভড়কে দেন। অনেকেই মনে করেন এবার সাঈদের কঠোরতার কারণেই চেম্বারে আমূল পরিবর্তন এসেছে। কারণ এবারও ওসমনাদের ফর্মূলায় নির্বাচন ও পদ কুক্ষিগত রাখার চেষ্টা ছিল। সহ সভাপতি পদে সাঈদও রয়েছেন আলোচনায়।

নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ দীর্ঘ সময়ে দখল রেখেছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। বিএনপির সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী বাদ দিয়ে সভাপতি চেয়ারে বসেন সেলিম ওসমান। এরপর থেকে টানা সভাপতি থেকে থামেন ২০১৮ সালে। ওই বছর জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে তার স্থলে বসেন তার খালেদ হায়দার খান কাজল। চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির দ্বি-বার্ষিক (২০১৮-২০২০) নির্বাচনে বিনা ভোটে নির্বাচিত হন তিনি। অসুস্থ অবস্থা নিয়ে তিনি ৬ বছর ২ মাস দায়িত্ব শেষে গত ৪ সেপ্টেম্বর তিনি পদত্যাগ করেন।

Islam's Group