নারায়ণগঞ্জ শহরের ফুটপাতগুলোতে হকারদের দৌরাত্ম্য কঠিন রূপ ধারণ করেছে। সিটি করপোরেশনের ড্রেন নির্মাণ ও সড়ক সংষ্কার কাজের জন্য এমনিতেই চলার পথ সংকুচিত হয়ে আছে। আর এরমধ্যেই তাদের বেপরোয়াভাবে ফুটপাত দখল করে রাখায় হাঁটা তো দূরের কথা পা ফেলাই অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে চাষাঢ়া, কালীরবাজার ও দুইনং রেলগেটসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকার ফুটপাত ও সড়ক নগরবাসী একেবারেই ব্যবহার করা যাচ্ছেনা।
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, চাষাঢ়া থেকে দুইনং রেলগেট অবধি বিবি রোডে কিছুক্ষণ পরপর যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ছুটির দিনে শহরে ঘুরতে আসা লোকজন যানজটের এই দৃশ্য দেখে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে ছুটলেও ফুটপাত হকারদের দখলে থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন সবাই।
চাষাঢ়ার মার্ক টাওয়ারের সামনে ফুটপাতের উপর এক পথচারী বলেন, ফুটপাতের দুইদিকেই হকার। এক সাইডে বসে অন্য সাইড মানুষের চলাচলের জন্য রাখলেই পারে। কিন্তু তাদের পুরোটা লাগবে। মনে হচ্ছে এই শহরের ফুটপাত তারা পজিশনে কিনে রাখছে। এই দুই তিনশ হকারের জন্য হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন কষ্ট করতাছে। প্রশাসন এসি রুমে বসে বসে খালি দেখে।
চাষাঢ়ার খাজা সুপার মার্কেটের সামনে নারী পথচারী বলেন, বাচ্চাদের নিয়ে একটু বের হয়েছি খাওয়া দাওয়া করার জন্য। বাসা থেকে রিকশায় করে শহরে আসতে পারিনি জ্যামের জন্য। তাই বাধ্য হয়ে ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে হচ্ছে। কিন্তু ফুটপাত দিয়েও হাঁটা যাচ্ছেনা হকারের জন্য। বিদেশেও হকার আছে তবে সেখানে শৃঙ্খলাও আছে যা এখানে নেই। হকারদের উচিত একটা নিয়ম মেনে রাস্তায় বসা। এভাবে যেমনে মনে চাইলো আর বসে পড়লো! এটা বন্ধ করতে হবে।
জানা গেছে, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন যৌথ বাহিনীর সহায়তায় বেশ কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযানে জরিমানা থেকে শুরু করে অনেককে শাস্তি দেয়া হয়েছে এবং যানবাহন জব্দও করা হয়েছে। তবে সেই অভিযানের সুফল খুব বেশি সময় ভোগ করতে পারেনি নগরবাসী। কারণ যৌথ বাহিনী ও সিটি করপোরেশনের লোকজন চলে যাওয়র সাথে সাথে আবারও হকারদের দখল ও যানজটে পতিত হয়েছে শহর।
নগরবাসী মতে, রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাবেক এমপি শামীম ওসমান এই শহরে হকারদের প্রতিষ্ঠিত করে গেছে। তবে এখন কার স্বার্থে কয়েকলাখ নগরবাসীকে কষ্ট দিয়ে ফুটপাত দখল করে হকারদের বসতে দেয়া হচ্ছে তা অজানা অনেকের কাছে।
আপনার মতামত লিখুন :