News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

শহরে মাঠ নেই, সুযোগ নিচ্ছে ব্যায়বহুল ‘টার্ফ ফিল্ড’


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: এপ্রিল ১৬, ২০২৫, ১০:০৪ পিএম শহরে মাঠ নেই, সুযোগ নিচ্ছে ব্যায়বহুল ‘টার্ফ ফিল্ড’

নারায়ণগঞ্জের দেওভোগ এলাকায় থাকেন বাদশা মিয়া। তার বয়স এখন পঁয়ত্রিশ। পনেরো বছর আগে বাদশা ও তার বন্ধুরা যেখানে খেলাধুলা করতেন সেই মাঠ এখন নেই। মাঠের জায়গায় হয়েছে বড় বড় অট্টালিকা এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। শৈশবের অসংখ্য স্মৃতি জড়িয়ে থাকা নিজ এলাকার সব মাঠ হারিয়ে গত শুক্রবার বাদশা ও তার বন্ধুরা খেলতে যান ফতুল্লার পঞ্চবটিতে অবস্থিত একটি টার্ফ ফিল্ডে। সেখানে কথা হয় তাদের সাথে। পঞ্চবটি পুলিশ লাইন্সে একটি পোশাক কারখানার ছাদে বানানো হয়ছে ড্যানিসন টার্ফ নামে এই নতুন মাঠে একটি ফুটবল ম্যাচ খেলতে ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা দিতে হয় বলে জানান তারা।

বাদশা মিয়া বলেন, আমরা ছোটবেলায় যেই মাঠে খেলতাম সেগুলো বলতে গেলে একটাও নাই। সিটি করপোরেশন বা কেউ কখনো মাঠের কথা চিন্তাও করে নাই। তারা ব্যবসার জন্য বিল্ডিং করে ফ্ল্যাট বিক্রি করছে। আমার বাড়ির সামনে সিটি করপোরেশনের ৬টা বড় বিল্ডিং কিন্তু একটা মাঠ নাই। যার কারণে আমরা এখন হাজার হাজার টাকা খরচ করে এই ধরনের মাঠে খেলতে আসি। আমরা তো কখনো চিন্তাই করিনি যে এভাবে টাকা দিয়ে একদিন খেলতে হবে।

বাদশা‘র বন্ধু মোহাম্মদ খান মাহমুদের বাড়িও দেওভোগ এলাকায়। তিনি বলেন, মাঠ নেই বলে ব্যবসায়ীরা টার্ফ ফিল্ড তৈরি করছে। আমার কাছে মনে হয় এটা সামনে লাভজন ব্যবসায় পরিণত হবে। কারণ যেহেতু কোথাও তেমন ভালো মাঠ নেই, তাই সবাই এখন থেকে টাকা খরচ হলেও এখানে আসবে খেলতে।

তিনি আরো বলেন, টার্ফের মাঠগুলো অবিকল মাঠে মতো। কিন্তু আবার মাঠও না। কারণ এখানে আপনার অনেক টাকা দিয়ে খেলতে হবে। তবে মনমতো খেলতে পারবেন না। কারণ আপনাকে একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খেলা শেষ করতে হবে। আমাদের বাড়ির আশপাশে যেহেতু কোনো মাঠ নাই তা আমরা বলতে পারেন বাধ্য হয়েই এখানে আসি। কি করবো, বয়স বাড়লেও মনটা আগের মতোই আছে। সময় পেলেই খেলতে ইচ্ছে করে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ শহরে গত এক বছরে বেশ কয়েকটি টার্ফ ফিল্ড তৈরি হয়েছে। আরো বেশ কয়েকটা মাঠ তৈরির কাজ চলমান আছে। কারণ অনেকেই ভাবছেন এটি একটি লাভজন ব্যবসা হতে পারে। পঞ্চবটির পুলিশ লাইন্স এলাকার পোশাক কারখানার ছাদে অবস্থিত ওই মাঠের এক কর্মচারি বলেন, ব্যবসায়ীরা তো চাইবেই সুযোগ নিতে। এখন যেহেতু শহরে মাঠ নেই তাই আরো অনেকে এমন পরিকল্পনা করছে। আমরা এক ম্যাচে ২ তিন হাজার টাকা নেই কারণ আমাদের পাখির খাঁচার মতো দেখতে এই মাঠ বানাতে অনেক টাকা খরচ হয়। সবচেয়ে বেশি টাকা লাগে প্লাস্টিকের ঘাস কিনতে।

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নগর পরিকল্পনাবিদ মঈনুল ইসলাম বলেন, আমাদের শহরের ভেতরে প্রায় ১৪ টি মাঠ নতুন করে খেলার উপযোগী করে তোলার কাজ চলছে। এছাড়া আমরা দেখছি কিভাবে শহরে খেলার মাঠ বৃদ্ধি করা যায়। এ নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে কারণ আমরাও বুঝি যে শহরে পর্যাপ্ত মাঠ নেই।

Islam's Group