আওয়ামীলীগ সরকার আমলে ২০১২ সালের ১৫ মার্চ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহামেদ। উদ্বোধনী কয়েক মাস পর ২০১৩ সালে কাজ শুরু হয়ে ২০১৬ সালে কাজ শেষ হয়। ৮ বছর বেশি সময় ধরে পরে আছে শহরে প্রাণকেন্দ্র গ্রীন্ডলেজ ব্যাংক মোড়ে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনটি। সরকারি এই ভবনটি বিপুল ব্যয়ে নির্মিত হয়ে কোন কাজে লাগছে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বহুতল ভবন নির্মাণ করে বছরের পর বছর ফেলে রাখা রাষ্ট্রীয় সম্পদের বিরাট অপচয়। অন্তবর্তী সরকার আমলে জেলা প্রশাসনের একাধিক সিদ্ধান্তে মাধ্যমে ভবনটি সচল করার সম্ভব হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
৯ বছর যাবৎ খালি পড়ে নষ্ট হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন। আওয়ামী লীগ সরকারের ‘৬৪ জেলায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন’ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হয়েছিল নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনটি।
নির্মিত হওয়ার পর আইনজীবীরা বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত এলাকা থেকে নবনির্মিত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের দূরত্ব দুই কিলোমিটার। এত দূরে গিয়ে জনগণকে সেবা দেওয়া কঠিন।
বিগত সময়ে নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি হাসান ফেরদৌস বলেন, দেশের সব জেলাতেই ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালত পাশাপাশি থাকে। ব্যতিক্রম শুধু নারায়ণগঞ্জ। সেখানে ভবন নির্মাণ না করতে একাধিকবার আপত্তি জানানো হয়েছিল। কিন্তু কেউ কথা শোনেনি। এখানে আসামি, বিচারক ও আইনজীবীদের নিরাপত্তার বিষয়টি জড়িত। অনেক সময় একই আসামির দুই জায়গায় হাজিরা থাকে। বিচারপ্রার্থী মানুষ দুই কিলোমিটার রাস্তা যাতায়াত করে একবার জজ কোর্ট, আরেকবার ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে দৌড়াদৌড়ি করবে। এতে মানুষের ভোগান্তি বাড়বে।
এদিকে অযত্নে অবহেলা পড়ে থেকেই নষ্ট হচ্ছে সরকারি হাজার কোটি টাকার বানানো চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবন। আওয়ামীলীগ দ্বিতীয় বার সরকার গঠনের পর ২০১৬ সালের ১০ মে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী পরিষদের নির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এমপি। তিনি দু’টি আদালত ভবন একই স্থানে রাখার প্রতিশ্রæতি দেন। ওই সময়ে মন্ত্রী বলেন, আপনাদের এ সমস্যার সমাধান করতে আমার উপর যত চাপই আসুক তা উপেক্ষা করে সমাধান করব। জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারা প্রতিশ্রুতি দিলেও একই স্থানে থাকছেনা জেলা জজ আদালত ও চীফ জুডিশিয়াল আদালত ভবন। চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবন উদ্বোধনের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট হাইকোর্ট বিভাগ থেকে একটি চিঠিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজকে নির্দেশনা দেয়া হয়। একই নির্দেশনার অনুলিপি চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ও জেলা গণপূর্ত বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট হাইকোর্ট বিভাগর রেজিস্টার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে উদ্বোধনের ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রধান বিচারপতির নির্দেশনা জানানো হয়। তার পরেও আইজীবীদের কারনের সেটি আর উদ্বোধনের করা হয়নি।
উদ্বোধন না হওয়া পর আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি শামীম ওসমান বলেছিলেন, ভবনটি তোলারাম কলেজের ছাত্রাবাস কখনো হসপিটাল আবার কখনো নারায়ণগঞ্জ এর বিভিন্ন দফতরের এর কার্যালয় করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু পলাতকের আগেও তিনি এ ভবনটি কোন সুদুত্তর সিদ্ধান্ত দিতে পারেনি।
আপনার মতামত লিখুন :