বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দীর্ঘ প্রায় ৮ মাস পর যেন রাজনৈতিক মামলা নিয়ে যেন ঘুম ভাঙছে বিএনপির আইনজীবীদের। বিএনপির আইনজীবীরা যেন এসকল মামলার প্রত্যাহারে যেন সোচ্চার হয়েছেন। সেই সাথে বিএনপির আইনজীবীরা একসাথে বসেছেন।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবীর ভবনের তৃতীয় তলায় নারায়ণগঞ্জ আদালতের আইন কর্মকর্তা তথা পিপি এপিপিরা একসাথে বসে সভা করেছেন। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এইচ এম আনোয়ার প্রধান উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে এই সভা সম্পর্কে নারায়ণগঞ্জ আদালতের পিপি এপিপিদের বার্তা পৌছে দেয়া হয়। বার্তায় বলে দেয়া হয়, পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের বিএনপি সহ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার বিষয়ে জরুরী আলোচনা করা হবে।
সভায় আলোচনা করা হয় নারায়ণগঞ্জ আদালতে রাজনৈতিক মামলা রয়েছে ৬০০। কিন্তু ঢাকা থেকে চিঠি আসছে ২৮৯ টি মামলা প্রত্যাহারের। তাহলে বাকী মামলাগুলো কিভাবে শেষ করা হবে সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়। সেই সাথে সভা থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যেন পিপি এপিপিরা যেন রাজনৈতিক মামলাগুলো তাড়াতাড়ি শেষ করে দেন। যাতে করে দ্রুত মামলাগুলো শেষ করা যায়।
নারায়ণগঞ্জ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জাকিরের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন নারী ও শিশু নির্যাতন দম ট্রাইব্যুনাল আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম মোল্লা, অ্যাডভোকেট মশিউর রহমার শাহীন, অ্যাডভোকেট আজিজ আল মামুন ও অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক নয়ন সহ বিভিন্ন পর্যায়ের আইনজীবীরা।
সূত্র বলছে, দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিলো আওয়ামী লীগ। আর এই দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা নানাভাবে নির্যাতিত নিপেড়িত নিস্পেষিত হন। কেউ বা গুমের শিকার হয়েছেন আবার কেউ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।
বিগত প্রায় ১৬ বছরে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় বিএনপির আইনজীবীরাও স্বস্তিতে থাকতে পারেননি। তাদেরকেও নানাভাবে নির্যাতন নিপীড়ন অপমান অপদস্থ হয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির নেতৃত্ব থেকে বঞ্চিত থেকেছেন। আইনজীবীরা নিরাপদে ভোট দিতে পারেননি। নির্বাচনের সময় বহিরাগতরা আদালতপাড়ায় এসে শোডাউন দিয়েছেন। আইনজীবীদেরকে হেনেস্তা করেছেন।
এরই মধ্যে গত বছরের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। আর এই পতনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরাও আত্মগোপনে চলে যান। তাদের এই আত্মগোপনে চলে যাওয়ার মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন পর আইনজীবী সমিতির কর্তৃত্বে আসেন বিএনপির আইনজীবীরা। সেই সাথে বিএনপির অন্যান্য আইনজীবীরাও প্রভাব আধিপত্য ফিরে পান।
কিন্তু এই সুযোগ সুবিধা পেয়েই যেন তারা অতীতে সবকিছু ভুলে গেছেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্যাতন নীপিড়ন ভুলে গেছেন। যারা আদালতে এসে আইনজীবীদের দিকে চোখ রাঙাতেন এবার তাদের পক্ষেই অবস্থান নিচ্ছেন বিএনপির আইনজীবীরা। আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের চেয়ে তাদের দরদ যেন বেশি। আওয়ামী লীগের নেতাদের পক্ষে সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা চালাচ্ছেন।
আপনার মতামত লিখুন :