নারায়ণগঞ্জ শহরের মন্ডলপাড়া ব্রিজের সামনে সিএনজি ও অটোরিক্সা থেকে চাঁদাবাজির কারণে অতিষ্ট সাধারণ পরিবহন শ্রমিকেরা। কোনো নিয়ম ছাড়াই সেখানে একটি চক্র চাঁদাবাজির মহোৎসবে মেতেছেন বলে অভিযোগ সবার।
গাড়ির চালকেরা জানান, টাকা না দিলে গাড়ি আটকে রেখে মারধর করার ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়ত। তবে এই চাঁদার ভাগ বিভিন্ন শ্রেনি পেশার মানুষের পকেট পর্যন্ত যায় বলে এটি কোনোভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছেনা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রকাশ্যে মন্ডলপাড়া ব্রিজের সামনে চেয়ার টেবিল নিয়ে বসে প্রতিটি সিএনজি এবং অটোরিক্সা আটকে টাকা তুলছেন ৩-৪ জন লোক। তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয় গাড়ি থেকে টাকা নেয়ার জন্য সিটি করপোরেশন অথবা অন্য সরকারি অনুমতি আছে কিনা। তবে এই কথা শুনতেই সেখান থেকে সটকে যায় তারা। কিছুক্ষণ দূরে থেকে আবারো চাঁদাবাজি শুরু করেন তারা।
সিএনজি চালকেরা জানান, সিটি করপোরেশন থেকে মন্ডলপাড়া ব্রিজের সামনে একটি স্ট্যান্ডের জন্য একজনকে ইজারা দেওয়া হয়েছে। সেই হিসেবে যারা ওই স্ট্যান্ডে গাড়ি রাখেন তারা প্রতিদিন ইজারাদারকে টাকা দিতে বাধ্য। তবে এর বাইরের কোনো সিএনজিও এই ব্রিজ অতিক্রম করতে চাইলে টাকা দিতে হয় স্থানীয় একটি চাঁদাবাজ চক্রকে।
অভিযোগ করে বেশ কয়েকজন সিএনজি চালক বলেন, বিএনপি নেতা হাসানের নাম ভাঙিয়ে মিজান রনি ও খোরশেদসহ আরো বেশজন মিলে মন্ডলপাড়া ব্রিজে প্রতিদিন গড়ে ৩০০ থেকে ৩৫০ টি সিএনজি থেকে চাঁদা উত্তোলন করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিএনজি চালক বলেন, ‘‘বিএনপি নেতা হাসান সাবের লোকজন ব্রিজের উপরে টেকা নেয়। নিয়ম হইল যারা মন্ডলপাড়ার স্ট্যান্ডে গাড়ি রাখবো হেরা টেকা দিবো। কিন্তু এই শহরের যতো গাড়ি তাগো সামনে দিয়া যাইব সবার কাছ থেকা টেকা তুলে। গাড়ি নাম থামাইলে পরে আবার গাড়ি আটকায়। ছাত্ররা কি এই কারণে দেশ স্বাধীন করছে?’’
একই অভিযোগ করে আরো এক সিএনজি চালক বলেন, মুন্সিগঞ্জ থেকে দুইনম্বর গেট আবার দুইনম্বর গেট থেকে মুন্সিগঞ্জ। এই রাস্তায় আমরা গাড়ি চালাই। প্রতিদিন কয় টাকা কামাই ভাই? কিন্তু রাস্তায় তিন-চাইর জায়গায় চাঁন্দা দিতে হয়। মন্ডলপাড়া ব্রিজের উপরে, কাশিপুর, দুইনম্বরগেট, মুক্তারপুর ব্রিজের টোল আবার মুন্সিগঞ্জ গেলেও টেকা দেই। যারা কাজ করে খায় তাদের চেয়ে চাঁদাবাজরা ভালো আছে। কোনো কষ্ট নাই পুঁজি নাই কিন্তু লাভ আর লাভ। সরকার এদের একটা কিছু করলে মানুষের অনেক উপকার হইব।
আপনার মতামত লিখুন :