দৈনিক সময়ের নারায়ণগঞ্জের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাবস্থায় তিনি বেশ দাপটের সাথেই মামলা পরিচালনা করে আসছিলেন। প্রত্যেক তারিখেই উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের কাছে নিজের সাহসিকতার পরিচয় দিতেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই কামরুল হাসান মুন্না পলাতক রয়েছেন। সেই সাথে গত নয় মাস ধরেই আদালতে নিজেকে অসুস্থ উল্লেক করে সময় আবেদন করে আসছেন। এ পর্যন্ত ৭ টি তারিখে তিনি নিজেকে অসুস্থ হিসেবে উল্লেখ করছেন। সে হিসেবে তার দাবী অনুযায়ী তিনি প্রায় নয় মাস ধরেই অনুস্থ রয়েছেন। সেই সাথে শেষ পর্যন্ত আদালত আগামী তারিখে স্বশরীরে উপস্থিত হওয়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন।
এদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই পলাতক রয়েছে আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহসীন মিয়া। কিন্তু তিনি পলাতক থেকেও তার জুনিয়র আইনজীবীর মাধ্যমে প্রত্যেকদিনই আদালতে উপস্থিত দেখাচ্ছেন। সেই সাথে তার পক্ষে মামলা পরিচালনা করছেন তার জুনিয়র অ্যাডভোকেট রামমঙ্গল সরকার।
আদালতপাড়া সূত্র বলছে, দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর ধরেই নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় এককভাবে প্রভাব বিস্তার করে আসছিলেন আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবী। তাদের বাইরে কেউ কোনো কথা বলার সাহস করতেন না। তারা যেভাবেই চাইতেন সেভাবেই সবকিছু পরিচালিত হতো। আইনজীবী সমিতির নির্বাচনেও এককভাবে কর্তৃত্ব বজায় রাখতেন আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা।
এরই মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র- জনতা আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছাড়েন দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ। সেই সাথে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়তে হয়। এই ঘটনার পর থেকেই সারাদেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়ে যায়। সারাদেশেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান।
তারই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়াতেও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা আত্মগোপনে চলে যান। অনেকদিন ধরেই তাদের আদালতপাড়াতে দেখা যায়নি। সেই সাথে দীর্ঘদিনের ক্ষোভ জমে থাকা আইনজীবীরাও তাদেরকে হন্য হয়ে খোঁজ করছিলেন। গত ৫ আগস্টের পর থেকে অনেকদিন ধরেই আদালতপাড়া উত্তপ্ত ছিলো।
তবে সময় অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে আদালতপাড়ার পরিস্থিতি শান্ত হয়ে উঠছে। সেই সাথে সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাাবিক হতে শুরু করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরাও আদালতপাড়ায় ফিরতে শুরু করেছেন। আওয়ামী লীগপন্থী প্রায় সকল আইনজীবীদেরই আদালতপাড়ায় দেখা মিলছে। পাশাপাশি বিএনপির আইনজীবীরাও তাদেরকে স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছেন।
কিন্তু অ্যাডভোকেট মোহসিন মিয়ার বেলায় তারা যেন ছাড় দিতে নারাজ। বিগত দিনে তারা যেসকল কর্মকান্ড করেছেন সেগুলোর হিসেব নিয়েই বিএনপির আইনজীবীরা তাদেরকে ছাড় দিবেন বলে আইনজীবীদের মুখে শোনা যাচ্ছে। ইতোমধ্যে তাদের নামে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই মামলার মুখোমুখি তাদের হতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :