নারায়নগঞ্জ সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় নারী ও শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদে নারায়নগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়নগঞ্জ কলেজ শাখার আহ্বায়ক মৌমিতা নুরের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আবিদ রহমানের সঞ্চালনায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন , বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান, অর্থ সম্পাদক শাহিন মৃধা,প্রচার সম্পাদক রাতুল দেওয়ান, ভোলাইল আঞ্চলিক শাখার আহ্বায়ক মাহাদি হাসান, পাগলা উচ্চ বিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আফসানা আহমেদ, তারুণ্যের'২৪ নারায়নগঞ্জ কলেজের এর সংগঠক তাহমিদ আনোয়ার, সদস্য শেখ সাদী,সোহাগ,ফারজানা সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্ধরা।
মানববন্ধনে বক্তব্যে ছাত্রনেতা সাইদুর রহমান বলেন, নারায়ণগঞ্জ সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন যায়গায় ধর্ষণ ছিনতাইসহ খুন গুমের তিব্র নিন্দা জানান। তিনি আরও বলেন এই ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে। ৮ মার্চ নারী দিবসে আমরা নারী দিবস পালন করি কিন্তু এখন আজ দেখতে পাচ্ছি যে নারীরা আজ ঠিক ভাবে রাস্তায় বের হতে পারে না। এমনকি তাদের বাড়িতে ও তারা নিরাপদ না।আজ শুধু নারী না ছেলেরা ও নিরাপদ নাই তাদেরকে আজ ছিনতাইকারীর কবলে পড়তে হয়।
তিনি আরও বলেন- যে ৫ ই আগস্টের এই অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে যদি বিচারহীনতা এই তৎপরতা থাকে তাহলে বাংলাদেশে আরেকটি দুর্বার আন্দোলন গড়ে উঠবে। তিনি সরকারকে এই ধর্ষকদের গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তি দিয়ে বিচারের আহবান করেন। তিনি আরও বলেন গত দুইদিন আগে মাগুরায় ৮ বছর বয়সের ছোট মেয়েকে ধর্ষণ করে তার বোনের শ্বশুর ও স্বামী এই ধর্ষণের তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন এই ধর্ষককে শান্তি দিতে হবে। তিনি আরও বলেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার পক্ষ থেকে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ দিন যাবত নারায়ণগঞ্জ শহিদ মিনারে ধর্ষণ বিরোধী অবস্থান কর্মসূচি করে। সেখানে ৪ দিনই উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ কলেজ কমিটির আহবায়ক মৌমিতা নূর ও আর ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। তিনি বলেন মৌমিতা নূরদের এই আন্দোলন চলবে যত দিন না এই ধর্ষকদের শাস্তি না হবে।
মৌমিতা নুর বলেন, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারীদের অসামান্য ভূমিকা প্রত্যক্ষ করেছি, অথচ আজ নারীরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে পারে না। আমাদের মা-বোনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যদি এই পরিস্থিতি পরিবর্তন না হয়, তাহলে আমরা আরও বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তুলবো।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল গঠন করতে হবে। যতদিন ধর্ষণ বন্ধ না হবে এবং ধর্ষকদের গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় না আনা হবে, ততদিন আমাদের লড়াই চলবে। আমরা চাই, ধর্ষকদের পাশাপাশি তাদের আশ্রয়দাতাদেরও জাতির সামনে উন্মোচন করা হোক।এই রাষ্ট্র এবং সমাজ দেশের জনগণের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। যার নজির বিগত কয়েক দিনের ধর্ষণকাণ্ডে দেখা যায়। এই যে নারীর প্রতি বঞ্চনা, ধর্ষক আমাদের চোখের সামনে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং নারীরা ধর্ষণের ভয় নিয়ে বেঁচে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। নারীর জন্য উপযোগী সহায়তা সেল গঠন করে নারীকে ন্যায়বিচার পেতে সাহায্য করতে হবে। এ ধর্ষকদের বিচারের মধ্যে দিয়ে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।
প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, আমরা প্রশাসনকে বলতে চাই, নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। ২৪শে নারীদের যে ভূমিকা ছিল, নারায়ণগঞ্জে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। নারায়ণগঞ্জ শিল্পের নগরী এবং এখানকার বেশিরভাগ নারী গার্মেন্টসহ বিভিন্ন স্থানে চাকরি করেন। তারা কর্মস্থলে যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। এসব ঘটনার বিচার হতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :