নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানাধীন সেনপাড়া এলাকায় মো. রনি মোল্ল্যাকে (৩২) হত্যার ঘটনায় সাথে জড়িত এজাহারনামীয় ২নং পলাতক আসামি সুমনকে (৪০) গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১ এর একটি টিম। সোমবার ২৮ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন নয়াগাঁও মধ্যপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত সুমন বন্দরের সেনপাড়া এলাকার হবি মিয়ার পুত্র।
২৮ এপ্রিল রাতে র্যাব-১১ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গত ৬ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানাধীন সেনপাড়া সাকিনস্থ তিন রাস্তার মোড় এবং জনৈক সফিকুল এর বসত বাড়ির বিপরীতে বরিশাইল্লার নির্মাণাধীন বাড়ির ছাদের উপর ও পাশ্ববর্তী সরকারি জমির উপর পূর্বপাশে দ্বন্দ্বের জেরে যুবক রনি মোল্ল্যাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনা সূত্র ও এজাহার পর্যালোচনায় জানা যায় যে, ভিকটিম নিহত মো. রনি মোল্ল্যা (৩২) বন্দর থানাধীন ১নং মাধবপাশা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।
ঘটনার ৩০ মাস পূর্বে বন্দর থানাধীন ১নং মাধবপাশা বড় জামে মসজিদের বাথরুমের তালা ভাঙ্গাকে কেন্দ্র করে এজাহারে উল্লেখিত আসামিদের সাথে ভিকটিমের বিরোধ শুরু হয়। উক্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে এজাহারনামীয় ৫নং আসামির হুকুমে অপরাপর আসামিগন ভিকটিমকে ঘটনার পূর্বে মারপিট করে। পরবর্তীতে চলতি বছরের ৬ এপ্রিল ভিকটিম রনি মোল্ল্যা তার নিজ বাড়ি হতে শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়ে গাড়িতে উঠার জন্য মদনপুর যাওয়ার পথে বিকাল ৫টা ৫৫ মিনিটের দিকে বন্দর থানাধীন সেনপাড়া তিন রাস্তার মোড়ে পৌঁছামাত্র সকল আসামীগন তাদের পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী বে-আইনী জনতায় দলবদ্ধ হয়ে ভিকটিমের চলার পথ আটকিয়ে এজাহারনামীয় ৫, ৬ ও ৭ নং আসামীদের হুকুমে ১,২,৩ ও ৪ নং আসামি সহ তাদের সহযোগী অজ্ঞাতনামা আসামিরা ভিকটিমকে মারপিট করতে করতে একই তারিখ বিকাল ৬টা ৫ মিনিটের দিকে বন্দর থানাধীন সেনপাড়া সাকিনস্থ জনৈক সফিকুল এর বসত বাড়ির অপজিটে বরিশাইল্লার নির্মানাধীন বাড়ির ছাদের উপর নিয়ে উক্ত আসামিরা একই উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ভিকটিমের মাথার ডান পাশে ১টি, মাথার বাম পাশে ২টি, বাম চোখের উপরে ১টি, গলার ডান পাশে ৩টি, গলার নিচে, বুকের বাম পাশে, বাম হাতের চেনার নিচে ৪টি, বাম হাতে ৭টি, পিটের নিচে ৬টি পেটের বাম পাশে, পায়ের হাটুর নিচে সহ শরীরের বিভিন্নস্থানে কাটা রক্তাক্ত জখম করে মৃত্যু নিশ্চিত করে ভিকটিমের মৃতদেহ পাশ্ববর্তী সরকারি জমির ভিতর ফেলে দিয়ে যে যার মত চলে যায়। ভিকটিমের স্ত্রী লোকমুখে ঘটনার সংবাদ পেয়ে লোকজন সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে ভিকটিমকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য জেনারেল হাসপাতাল (ভিক্টোরিয়া) নারায়নগঞ্জ নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার ভিকটিমকে পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে মৃত ঘোষণা করে। ঘটনার বিষয়ে বন্দর থানা পুলিশকে অবহিত করলে বন্দর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে ভিকটিমের মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে মৃতদেহ ময়না তদন্ত করার জন্য মর্গে পাঠায়।
পরে উক্ত ঘটনায় নিহত ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হয়ে ৭ জন আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন আসামির বিরুদ্ধে বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি রুজু হওয়ার পর থেকে পলাতক আসামিদের কে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-১১, সিপিসি-১, নারায়ণগঞ্জ ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন নয়াগাঁও মধ্যপাড়া এলাকা থেকে সুমনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :