News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বুধবার, ০৯ এপ্রিল, ২০২৫, ২৬ চৈত্র ১৪৩১

আওয়ামী লীগের নিষ্প্রাণ ঈদ উদযাপন


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: এপ্রিল ৬, ২০২৫, ০৬:৫৯ পিএম আওয়ামী লীগের নিষ্প্রাণ ঈদ উদযাপন

দীর্ঘ দেড় যুগ পর একরকম দূরাবস্থার মধ্য দিয়ে ঈদুল ফিতর পালন করতে হলো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের। দলের একাংশ দেশের বাহিরে পালিয়ে আরেকটি অংশ দেশের মধ্যে আত্মগোপনে নয়তো কারাগারে ঈদ উদযাপন করেন। বিগত সময় কখনো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পালিয়ে ঈদ পালন করতে হয়নি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল ঈদে এলাকায় থাকতে পারলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের সেই সুযোগও হয়নি। গত কয়েকমাস ধরেই পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছেন তারা। তবে দেশের বাহিরে থাকা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের রাজকীয় ঈদ পালন করতে দেখা গেছে। তাদের এসব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় তুলছেন। আর যারা বিভিন্ন মামলায় জেলহাজতে ঈদ পালন করেছেন তারা আক্ষেপ পালন করেছেন।

সম্প্রতি দেশের বাহিরে এক কফির আড্ডায় হাস্যেজ্জ¦ল অবস্থায় দেশের বাহিরে দেখা গেছে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি শামীম ওসমানকে। কর্মীরা বলছেন, ঈদ তো সবার জন্যই। নেতারা যে ঈদ উদযাপন করতে পারবেন না, তা নয়। তবে তাদের সঙ্গে কর্মীদের যোগাযোগ ও সুখ-দুঃখের বিনিময় হলে ভালো হয়। কর্মীরা প্রাণ পায়। কিন্তু বর্তমানে বেশিরভাগ নেতাকর্মী তাদের থেকে বিচ্ছন্ন। তারা কোন মাধ্যমেই যোগাযোগ রাখছেন না। সহযোগিতা তো পরের ব্যাপার। এদিকে এবারই প্রথম কারাগারে ঈদ পালন করেছেন নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সাবেক এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী। বাকি তিন এমপি নজরুল ইসলাম বাবু, কায়সার হাসনাত এবং সেলিম ওসমানের কোনো হদিস মেলেনি।  

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন থানায় এ পর্যন্ত ১০০টির বেশি হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলায় গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন নেতাকর্মীরা। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে অনেক নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। শুধুমাত্র তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এলাকায় থাকলেও তারা গোপনে নিজ এলাকায় অবস্থান করছেন। আর ছাত্রলীগ, যুবলীগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী দেশের বিভিন্ন স্থানে, কেউ কেউ দেশের বাহিরে রয়েছেন। যাদের বর্তমানে শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেই সক্রিয় দেখা যায়।

এর আগে গত ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই বেকায়দায় রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কেন্দ্র থেকে বারবার বিভিন্ন কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হলেও রাজপথে নামার সাহস দেখাতে পারে নি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এর ফলে রাজপথ থেকে অবসরে রয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।  বর্তমানে মামলা, গ্রেফতার আতঙ্কে নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে থাকায় দলটি পরিচালনা করার কোনো নেতা পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের পুরোই টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে। প্রত্যেক নেতাকর্মী বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। যখন আওয়ামী লীগ বাদে অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও তাদের অঙ্গসংগঠনগুলো রাজপথ দখলে রেখেছে ওই অবস্থায় আওয়ামী লীগের পক্ষে একত্রিত হওয়া মোটেও সহজ বিষয় না। অথচ এই নারায়ণগঞ্জ থেকেই আওয়ামী লীগের গোড়াপত্তন হয়েছিল। সে কারণে নারায়ণগঞ্জকে বলা হয়ে থাকে আওয়ামী লীগের জন্মস্থান। অর্থাৎ বেসামাল দলটির নেতাকর্মীরা নিজ জন্মস্থান জেলাতেই বিলুপ্তির পথে রয়েছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের সরকারের পতন ঘটবে তা কখনোই আন্দাজ করতে পারে নি দলটির নেতাকর্মীরা। এর ফলে নেতাকর্মীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের কোনো ঘাটতি ছিল না। বরং শেখ হাসিনা এভাবে পালিয়ে যাবেন তা কখনোই চিন্তা করতে পারেন নি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এদিকে সারাদেশের মতোন নারায়ণগঞ্জেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হামলা, ভাঙ্গচুর করা হয়। অনেক কার্যালয় লুটপাট করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার সরকারের পতন ও দেশত্যাগের পর থেকেই সারাদেশের মতো নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের রাজনীতির মোড় ঘুরে গেছে। যেখানে কিছুদিন আগেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বড় বড় কথা বলতেন নিজেদের জানান দিতে ব্যস্ত থাকতেন সেখানে তারা একেবারেই আড়াল হয়ে গেছেন।

Islam's Group