নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন ফুরফুর মেজাজে দিন কাটছে।
গত বছর ২৪ ডিসেম্বর তার নেতৃত্বে থাকা নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। এক মাসের বেশি সময়ে পর চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি তাকে সদস্য রেখে জেলা বিএনপি ৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণা হয়। ওই সময়ে থেকে মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনকে আবারো আলোচনা ঘুরে আসেন। নিজ দলের প্রতিদ্বন্দ্বি মামুন মাহমুদের অধিনে তিনি জেলা সদস্য হওয়ার নিয়ে সমালোচনা কমতি ছিলো না।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা থানা বিএনপির উদ্যোগে চাঁদপুর মোহনায় এক বনভোজন অনুষ্ঠানে মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেন, আজ আমি আপনাদের সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলছি। আমি বহিষ্কার হতে পারি। আই ডোন্ট কেয়ার। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। জীবন বাজি রেখে দেশ স্বাধীন করেছি। বিএনপিতে গণতন্ত্র নেই এবং টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন বিক্রি হয়।
তাঁর বক্তব্যে ভাইরাল হলে তুমুল আলোচনা সমালোচনা পড়েন তিনি। মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনকে বহিস্কার বা শাস্তি আওতায় আসবে এমন গুঞ্জন ছিলো জেলা বিএনপি সকল স্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে। কিন্তু তাকে বহাল রেখেই গত ২৪ মার্চ ৩৩ সদস্য নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করেন কেন্দ্র।
গত ৯ এপ্রিল সিদ্ধিরগঞ্জ একটি রেস্টুরেন্টে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পরিচিতি সভায় মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন উপস্থিত হয়নি। ওই সভায় ৩৩ সদস্য বেশিভাগ উপস্থিত থাকলেও নিস্প্রাণ মিটিং হয়েছে বলে জানা গেছে।
একই দিনে কাশিপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে অংশ নেন গিয়াসউদ্দিন। তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এ দেশের আলেমদের উপরেও নির্যাতন করেছে হাসিনা। তাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে নিয়ে নির্যাতন করেছে। আমি আমার স্ত্রীর জানাজায় অংশগ্রহণ করতে পারিনি। তবুও আমরা এই ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। বিগত ষোল বছর আমরা এমন একটা অনুষ্ঠান করতে পারিনি।
এর আগে দিন ৮ এপ্রিল কুতুবপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে অংশ নেন মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। তিনি বলেন, আমরা ডিএনডির জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করছি। আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য কাজ করছি। আমরা ক্ষমতায় থাকলেও কাজ করি, না থাকলেও কাজ করি। আপনারা দেখেছেন গডফাদার বছরে একবার আসত ভোট চাইতে। আর কোনদিন তাকে কেউ দেখেনি। শুধু তার ছেলে আর ভাতিজার বিরাট পোস্টার দেখা যেত শিল্প এলাকায় যাতে করে ভালমত চাঁদাবাজি করা যায়। সামনে কোরবানির ঈদ আসছে। আপনারা দেখেছেন ঈদের সময় তারা কীভাবে হাটের ইজারার নামে তার ছেলে, ভাতিজা বৌয়ের কাছে টাকা দিত। এভাবে ছেলেকে নষ্ট করে কেউ আমি তা দেখিনি। টাকার লোভে সন্তানকে সন্ত্রাসী, অস্ত্রবাজ বানিয়েছে।
১২ এপ্রিল শনিবার ফতুল্লা থানা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথি থাকবেন গিয়াসউদ্দিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ সুলতান মাহমুদ মোল্লা। ইতোমধ্যে সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূইয়া বিজ্ঞপ্তি মাধ্যমে সকল স্তরে জানিয়েছেন। তার জনসভা ঘিরে গত সপ্তাহ জুড়ে সমালোচনা ছিলো গিয়াসউদ্দিন প্রতিপক্ষ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।
একটি সূত্রে জানা গেছে, পদত্যাগকারী বিএনপি নেতা শাহ আলম ইতোমধ্যে নির্বাচনের ঘোষনা ফতুল্লা নির্বাচনী এলাকায় চষে বেড়াছেন সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। নিজের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের এক কাতারে নিতে তিনি ঈদ পুণর্মিলনী পাশাপাশি জনসভা দিক ছুটছেন।
আপনার মতামত লিখুন :