বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময় আন্দোলনকারীদের উপর হামলা ও ছাত্র হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়ার একাধিক মামলার আসামি নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকা আবারো ঢাকায় প্রকাশ্যে দেখা গেছে। গত ১১ এপ্রিল বিকেল ৪টায় জাতীয় পার্টির উদ্যোগে ফিলিস্তিনের গাজা ও রাফা শহরে ইসরাইলি বাহিনীর বর্বর হামলা ও গণহত্যার প্রতিবাদে জাতীয় পার্টির বিক্ষোভ মিছিলে তাকে নারায়ণগঞ্জের হয়ে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে।
এদিন কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর যুবসংহতির নেতাকর্মীরা ঢাকায় গিয়ে মিছিলে যোগ দিয়েছেন। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এর নেতৃত্বে মিছিলটি জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে নাইট অ্যাঙ্গেল মোড়, বিজয়নগর পল্টন হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে গিয়ে সমাপ্ত হয়।
ঢাকায় জাতীয় পার্টির ওই মিছিলে মহানগর যুব সংহতির সদস্য সচিব শরীফ শাহ, মহানগর জাতীয় পার্টির দপ্তর সম্পাদক আশরাফুল আলম ও বন্দর উপজেলা যুব সংহতির সাংগঠনিক সম্পাদক মিরাজ উদ্দিন সজিবকে দেখা গেছে।
এর আগেও ঢাকায় জাতীয় পার্টির একটি মিছিলে হত্যা মামলার আসামি খোকাকে প্রকাশ্যে দেখা গেছে।
তথ্যমতে, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সাংসদ ও জাতীয় পার্টির বিভাগীয় অতিরিক্ত মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা সোনারগাঁও থানায় একটি ও ঢাকায় একটি মামলায় আসামি হয়েছেন সোনারগাঁ আসন থেকে দুইবারের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা।
এদিকে মামলায় আসামি হলেও লিয়াকত হোসেন খোকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিয়মিত বিগত আমলে সোনারগাঁয়ের নানা কর্মকাণ্ডের ছবি প্রকাশ করে চলেছেন। এমনকি ৫ আগস্টের পরেও লিয়াকত হোসেন খোকা সোনারগাঁয়ে তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে অবস্থান করেছিলেন, যখন আওয়ামী লীগের এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত পলাতক হোন। এরপরেই খোকাকে আসামি করে সোনারগাঁয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, ২০১৪ সালে নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ) আসনটি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরীক দল জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়া হয়। ওই নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পান প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা মোশারফ হোসেন এবং জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক পান লিয়াকত হোসেন খোকা। নির্বাচনের আগে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিলে লিয়াকত হোসেন খোকা বিনা ভোটে এমপি নির্বাচিত হোন। একইভাবে ২০১৮ সালেও এ আসনটি জাতীয়পার্টিকে ছেড়ে দেয় আওয়ামীলীগ। ওই নির্বাচনে দলের বিরোধীতা করে স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী হোন ২০০৮ সালের নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে নৌকা প্রতীকে এমপি হওয়া আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত। নির্বাচনের আগে কায়সার হাসনাতের বাড়িতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান দিয়ে তাকে নির্বাচনে থেকে জোড় করে সরিয়ে দিলে আবারো দ্বিতীয় বারের মত এমপি নির্বাচিত হোন লিয়াকত হোসেন খোকা। গেল নির্বাচনে এই আসনটি আর জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়নি আওয়ামী লীগ। এবার নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পান কায়সার হাসনাত ও জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে মনোনয়ন পান লিয়াকত হোসেন খোকা। নির্বাচনে খোকা ৩২ হাজার ভোট পান। নির্বাচনে কায়সার হাসনাত জয়ী হোন।
আপনার মতামত লিখুন :