আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই নিজ জেলা নারায়ণগঞ্জে বেশ নিষ্ক্রীয় হয়ে পড়েছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা। বর্তমানে তাকে ঢাকায় জাতীয় পার্টির বিভিন্ন কর্মসূচিতে বেশি লক্ষ্য করা যায়।
এদিকে জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে সে যুক্ত থাকলেও সার্বক্ষণিক তার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে উঠাবসা ছিল। পাশাপাশি মহাজোট গঠন করার স্বার্থে আওয়ামী লীগ টানা দুইবার এই আসনটি জাতীয় পার্টির জন্য ছেড়ে দেয়। এর ফলে দুইবারই বড় ব্যবধানে এমপি নির্বাচিত হোন লিয়াকত হোসেন খোকা। তবে সর্বশেষ নির্বাচনে এই আসনটি জাতীয় পার্টির জন্য ছেড়ে না দেওয়ায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতের নিকট তার পরাজয় ঘটে। পরাজয়ের পর থেকে তখন সোনারগাঁয়ের রাজনীতিতে নিষ্ক্রীয় হয়ে তিনি ঢাকার রাজনীতি সক্রিয় হোন। এদিকে, যতোদিন নাগাদ আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে কামব্যাক করতে না পারছেন খোকাও ততোদিন রাজনীতিতে আর আসতে পারছেন না। সেই সঙ্গে আগামীতে তার রাজনীতি করার সুযোগ ক্ষীণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জানা যায়, বর্তমানে তিনি জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য, অতিরিক্ত মহাসচিব (ঢাকা বিভাগ) এবং জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর তিনি দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ নির্বাচন করেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র লীগের প্রাথমিক সদস্য হিসেবে রাজনীতির হাতে খড়ি তার। ১৯৮২ সালে সফল রাষ্ট্রপতি নতুন বাংলাদেশের রূপকার পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ প্রতিষ্ঠিত নতুন বাংলা ছাত্র সমাজের মাধ্যমে জাতীয় পার্টিতে তাঁর রাজনীতির পথ চলা শুরু। অত:পর জাতীয় পার্টির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরে দায়িত্ব পালন শেষে ২০০৯-২০১৩ সালে জাতীয় পার্টির ঐতিহ্যবাহী যুব সংগঠন জাতীয় যুব সংহতি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন। এর আগে উপজেলা নির্বাচনে ওসমান পরিবারের সঙ্গে সক্রিয় ছিলেন তিনি। সেলিম ওসমানের অন্যতম আস্থাভাজন ব্যক্তি ছিলেন তিনি।
এদিকে গত ৫ই আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হলেও আওয়ামী লীগের মতোন জাতীয় পার্টিরকে কোণঢাসা করে রেখে দেওয়া হয়। দেশের কোনো গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে তাদের এখন রাখা হয় না। এই অবস্থায় আগামী নির্বাচনকে ঘিরে মহাবিপদে পড়েছেন জাপা নেতারা। সেই সঙ্গে তাদের রাজনীতি নিয়েও ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। তবে এই পরিস্থিতি কাঁটিয়ে তোলার চেষ্টা করতে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা। কিন্তু সরকার থেকে তাদের প্রতি কেনো নমনীয় দেখানো হচ্ছে না। সেই সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জড়িত নেতাকর্মীরা বরাবরের মতোন জাতীয় পার্টিকে স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে অভিহিত করে নেতিবাচক মন্তব্য করছেন। এর আগে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে অগ্নিকাণ্ড লাগানো মধ্য দিয়ে জাপার প্রতি মানুষের ক্ষোভের বহি:প্রকাশ ঘটেছে।
আপনার মতামত লিখুন :