নারায়ণগঞ্জে নির্বাচনী রাজনীতিতে গুরুত্বপুর্ন ভূমিকায় অবতীর্ন হয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমা জানিয়ে দেয়ার আগেই জেলার তিনটি আসনে নিজেদের প্রার্থীদের মেলে ধরতে শুরু করেছে দলটি। বিএনপির সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকান্ডের বিপরীতে নিজেদের ধীরস্থির রাজনীতি এবং জনগণের কাছে যাওয়ার প্রবনতা তাদের আলাদাভাবে পরিচিত করিয়েছে। যেখানে ৫ আগস্টের পর থেকে বি.এন.পি, এন.সি.পি, হেফাজত অভ্যন্তরীন বিরোধে বিতর্কের জালে জড়িয়েছে, সেখানে নিজেদের ক্লিন ইমেজ ধরে রেখে সকল দলের সাথে ঐক্য জারি রেখেছে জামায়াত।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় নির্বাচনকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর জামায়াতের কার্যক্রম চলছে একসাথেই। বিভিন্ন কর্মসূচিতে দলটির জেলা ও মহানগরের শীর্ষ নেতারা কাজ করছেন একসাথে। সাংগঠনিক কাজের সাথে সমানতালে চলছে নির্বাচনী প্রস্তুতি। দলের ভেতর অভ্যন্তরীন বিরোধ কিংবা নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা না থাকায় প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণা চলছে জোড়েশোড়ে। ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জ পাঁচ, চার এবং তিন আসনে প্রার্থীদের পোস্টার ফ্যাস্টুন টানিয়ে মানুষের মাঝে নিজ প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছে দলটি। যেখানে পিছিয়ে আছে বিএনপি, এনসিপি সহ অন্যান্য দলগুলো।
রাজনৈতিক সচেতন মানুষরা বলছেন, ধর্মীয় সংগঠন হিসেবে এতদিন নারায়ণগঞ্জবাসী যা দেখেছে তার তুলনায় ভিন্ন পরিচয় দেখাতে সক্ষম হয়েছে জামায়াত। দলের সমাবেশে নিজেদের শৃঙ্খলা এবং নির্বাচনী রাজনীতিতে নিজেদের পরিচ্ছন্ন রেখে দলের সুনাম ধরে রাখতে পেরেছেন। বিভিন্ন স্থানে দলাদলি বা বিরোধ তৈরি হলেও নারায়ণগঞ্জে এমন চিত্র দেখা যায়নি। উল্টো সবার সাথে সুসম্পর্ক রেখে রাজনীতিতে নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন। দল গঠনের পাশাপাশি শিক্ষক, আইনজীবী, চিকিৎসক, ব্যবসায়ী সেক্টরেও নিজেদের মেলে ধরতে শুরু করেছে দলটির নেতারা।
সূত্র বলছে, ‘জামায়াতের প্রার্থীরা এখন স্ব স্ব আসনের সমস্যা নিয়ে কাজ করছেন। সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন জনগনের কাছে। প্রার্থীদের বার্তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি আমলে তুলনামূলক বঞ্চিত বা অবহেলার শিকার হওয়া অঞ্চলের বাসিন্দারা সাদরে গ্রহণ করছেন জামায়াতের প্রার্থীদের। কারণ তারা নতুন কিছু দেখতে আগ্রহী। বিগত সময় বড় দলগুলো তাদের চাহিদা পূরণ করতে ব্যর্থ হবার সুযোগটি লুফে নিচ্ছে জামায়াত। এর পাশাপাশি দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের মাঝে দলের পক্ষ থেকে উপহার তুলে দিতেও দেখা গেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘জামায়াত তার নিজস্ব রাজনৈতিক বুদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে। কারও সাথে বিরোধ নয়, সবার সাথে ঐক্য এই মন্ত্রকে সামনে নিয়ে আওয়ামী লীগ ব্যতিত বাকি সবার সাথেই সুসম্পর্ক রেখেছে তারা। নেতাকর্মীদের ঝুট বাণিজ্য, ঘাট দখল, হাট দখল, রাস্তার ইজারা, মাঠের ইজারা নিয়ে চাহিদা না থাকায় আর্থিক সংঘাতে যাবার প্রয়োজন হয়নি বিএনপি বা অন্য দলগুলোর সাথে। তাই সর্বক্ষেত্রেই বাড়তি স্থান পাচ্ছে এবং মূল্যায়ন পাচ্ছে। এভাবে তাদের কার্যক্রম ধরে রাখতে পারলে অচিরেই দলীয় রাজনীতির পাশাপাশি নির্বাচনী রাজনীতিতে শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
আপনার মতামত লিখুন :