News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২

হেফাজতের বিদ্যমান কমিটি বর্জনে এগিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশিত: এপ্রিল ২৭, ২০২৫, ১০:০৬ পিএম হেফাজতের বিদ্যমান কমিটি বর্জনে এগিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো

নারায়ণগঞ্জ জেলা হেফাজতের আয়োজিত গণসমাবেশ বর্জন করেছেন মাওলানা আব্দুল আউয়ালের নেতৃত্বে একাংশ। দেশজুড়ে আলোচিত মাওলানা মামুনুল হক এই সমাবেশে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখলেও সমাবেশে আশানুরূপ উপস্থিতি ছিলো না। যেখানে হেফাজতের সমাবেশে সাধারন মানুষের ঢল নামতো, সেখানে এবার দেখা গেলো ভিন্ন চিত্র। একাংশের বর্জনের ফলে বেশ ভালো প্রভাব পড়েছে মূল জমায়েতে।

বর্জনের বিষয়টি নজরে এড়ায়নি মামুনুল হকেরও। তিনি তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে বলেন, ‘আজকে এখানে মাওলানা আব্দুল আউয়াল সাহেবের উপস্থিত থাকার কথা ছিলো। ৩ মে সমাবেশে বিভাজন ভুলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে অংশ নিবে।’

এদিকে গত কয়েকদিন ধরেই গণসমাবেশ নিয়ে চলছিলো দুই পক্ষের মধ্যে টানাপোড়েন। দফায় দফায় বৈঠক করা হলেও আব্দুল আউয়াল ও তার অনুসারীরা গণসমাবেশে যোগ দিতে নারাজ ছিলেন। মূলত তারা জেলা হেফাজতের কমিটি নিয়েই পূর্ব থেকে নাখোশ ছিলেন। এই সমাবেশে যোগদিলে অনেকটা মেনে নেয়া হবে বর্তমান কমিটিকে। তবে আব্দুল আউয়াল একা নন। তার সাথে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও মৌন সমর্থন দেন এই গণসমাবেশ বর্জনে।

সূত্র বলছে, হেফাজতে ইসলাম অরাজনৈতিক সংগঠন হলেও এই সংগঠনের অধিকাংশ নেতাকর্মী রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত। বিশেষ করে কওমী ঘরানার ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলোর সরাসরি অংশ গ্রহণ রয়েছে এখানে। নারায়ণগঞ্জ জেলা হেফাজত বর্তমানে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতাকর্মীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত রয়েছে। অন্যদিকে আব্দুল আউয়ালের সাথে রয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিসের নেতাকর্মী ও অনুসারীরা। তারা এই বর্জন সমর্থনে কাজ করে যাচ্ছেন।

শুধু তাই নয়, কওমী ঘরানার বাইরে বেরিয়ে স্থানীয় জামায়াতের নেতাকর্মীরাও এক প্রকার মৌন সমর্থন দিয়েছে বর্জনকারীদের পক্ষেই। কারন, মাওলানা ফেরদাউসুর রহমানের নিয়ন্ত্রনাধীন থাকা জেলা হেফাজতের কমিটি তারা ভালোভাবে গ্রহণ করতে পারেনি। জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিসের জেলা ও মহানগরের শীর্ষ নেতারা সরাসরি মুখ খুলে কিছু না বললেও দলগুলোর নেতাকর্মীরা ঠিকই তাদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেখানে শামীম ওসমানের ছোটভাই খ্যাত ফেরদাউসুর রহমানের সাথে হেফাজতের কার্যক্রম পরিচালনায় আপত্তি জানিয়েছেন।

বর্জনের পক্ষে থাকা একটি রাজনৈতিক দলের নেতা বলেন,  ‘হেফাজত বা যেকোন সংগঠন ৫ আগস্টের পরে আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীদের দ্বারা পরিচালিত হতে পারে না। মাওলানা মামুনুল হকের সাথে মাওলানা ফেরদাউসুর রহমানের সুসম্পর্ক রয়েছে। কারন সোনারগাঁয় যখন তার উপর হামলা হয় তখন ফেরদাউসুর রহমান ছুটে এসেছিলেন। পরবর্তীতে গাড়িতে করে মোহাম্মদপুর পর্যন্তও গিয়েছিলেন। এসব নানাবিধ কারনে ফেরদাউসুর রহমানকে তিনি পছন্দ করেন। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের মানুষ ফেরদাউসকে ভালোভাবে চিনে। শামীম ওসমানের অনুসারীদের সাথে নিয়ে এক মঞ্চে দাঁড়ালে তা সাধারণ মানুষের কাছে ধিক্কারজনক। সেই কারনেই বিদ্যমান কমিটি ও গণজমায়েত বর্জন করা হয়েছে।’

হেফাজতের অনুসারীরা বলছেন, অরাজনৈতিক সংগঠনকে বিতর্কিত অবস্থা থেকে ফেরাতে চাইলে দ্রুত উভয়পক্ষকে এক টেবিলে বসিয়ে স্থায়ী সমাধান করা জরুরী। অন্যথায় শুক্রবারের কর্মসূচী থেকেই নেতারা বার্তা পেয়েছে যে সাধারন মানুষ ধীরে ধীরে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে। এই অবস্থা চলমান থাকলে নারায়ণগঞ্জে আরও বেশী বিপাকে পড়বে হেফাজত। বিদ্যমান সংকট মোকাবেলায় নতুন করে কমিটি সাজিয়ে সকল পক্ষকে সমান সুযোগ প্রদান করলেই হেফাজতের পুরোনো ঐক্য ফিরে আসবে।

Islam's Group